গৃহযুদ্ধে জর্জরিত আফ্রিকার দেশ সুদানে জাতিসংঘের মিশন বন্ধ করে প্রস্তাব পাস করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। রোবাবর থেকে দেশটিতে মিশনের কার্যক্রমে ইতি টানবে বৈশ্বিক সংস্থাটি। এরপর সোমবার থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে দেশটি থেকে মিশনের সব কর্মকর্তা প্রত্যাহার করা হবে। খবর আলজাজিরার।
সুদান সরকারের অনুরোধের পর গত শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের এই মিশন বন্ধ করতে ভোটের আয়োজন করে নিরাপত্তা পরিষদ। ভোটাভুটিতে মিশন বন্ধের পক্ষে ১৪টি দেশ ভোট দিয়েছে। তবে রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।
সুদানে জাতিসংঘের মিশনটির নাম ইউনাইটেড নেশন্স ইন্টিগ্রেটেড ট্রানজিশন অ্যাসিসট্যান্স মিশন (ইইএনআইটিএএমএস)। ২০২০ সালে স্বৈরাচারী ওমর আল বশির সরকারের পতন হলে দেশটিতে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনে সহায়তা করতে এই মিশনের যাত্রা হয়েছিল।
গত মাসে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, বর্তমানে এই মিশনে ২৪৫ জন সদস্য কর্মরত আছেন। তাদের মধ্যে ৮৮ জন পোর্ট সুদানে। আর বাকিরা নাইরোবি ও আদ্দিস আবাবায় কর্মরত।
নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতরা। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের উপরাষ্ট্রদূত জেমস কারিউকি বলেছেন, আমাকে পরিষ্কার করতে দিন; এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্য এই মিশন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়নি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেছেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে সুদানে আন্তর্জাতিক উপস্থিতি কমে গেলে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নৃশংসতা চালানো অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে সুদানে বেসামরিক সরকারের পতন ঘটিয়ে শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নেন সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। ফলে সুদানের জন্য গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা আরও কঠিন হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সুদানকে গণতন্ত্রে ফেরাতে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল আরেকটি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। তবে সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক সহযোগী ও বেসামরিক বাহিনী আরএসএফপ্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলুর মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হলে ১৫ এপ্রিল রাজধানী খারতুমে সেনাবাহিনীর ব্যারাকে হামলা করে বসে আরএসএফ। এ হামলার পর সুদানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ৬০ লাখ মানুষ গৃহচ্যুত হয়েছেন।