আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে তাকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।
শপথ নেওয়া শেষে শেখ হাসিনা তার শপথপত্রে স্বাক্ষর করেন। এবার নিয়ে টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফলে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল–জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে।ক্ষমতাসীনদের পর সবচেয়ে বেশি জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, ৬২টি আসনে। তাঁদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতা। সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে।
শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বিদেশে থাকা অবস্থায় দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই বছরের ১৭ মে দিল্লি থেকে দেশে ফিরে দলের হাল ধরেন তিনি।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা করার সময় বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন কেবল শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। পরবর্তী সময়ে তিনি আশ্রয় পান ভারতে। প্রবাসে ছয় বছর অতিবাহিত করার পর দেশে ফেরেন। এর পর থেকে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে এবং তিনি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন।
এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একাধিক আসনে ভোট করলেও এবার শেখ হাসিনা একটিমাত্র আসনে গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) নির্বাচন করেছেন। এবার নিয়ে তিনি অষ্টমবারের মতো এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন।
গতকাল তিনি এই আসন থেকে প্রায় আড়াই লাখ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এম নিজাম উদ্দিন লস্কর পেয়েছেন মাত্র ৮৬৯ ভোট।
এর আগের চারবারের মতো এবারও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা দায়িত্ব নিচ্ছেন।
সংবিধান অনুসারে, ২৯ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হবে। এর আগে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংসদের কার্যভার গ্রহণ করবেন না।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, সংসদ সদস্যদের গেজেট মঙ্গলবার প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে ক্ষেত্রে ওই দিন শপথ নিয়ে পরদিন সরকার গঠনের সুযোগ রয়েছে। এমনটা হলে আগামী বুধবার ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসবও পালন করা হতে পারে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা আয়োজনের পরিকল্পনা আছে আওয়ামী লীগের।
২০১৮ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে ২৫৮টি আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এর আগে ২০১৪ সালে ২৩৪ এবং ২০০৮ সালে ২৩০ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে দলটি। এবারের মতো আগের তিনটি নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি (জাপা), ১৪ দলসহ অন্যদের সঙ্গে জোট-মহাজোট করে নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ।