ছবি:সংগৃহীত
দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের প্রজনন বিস্তার বাড়াতে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে সমুদ্রগামী জেলেদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। জেলেরা বলেন, বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন ধাপে ১৪৭ দিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় লাখো জেলে ও ব্যবসায়ীর মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে।
জেলেরা যে সরকারি সহায়তা পান, তা অপ্রতুল। ফলে তাদের জীবন কাটে চরম দুর্দশায়। ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ-এপ্রিল ৬০ দিনের অভয়াশ্রমের শেষ হতে না হতেই আবার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এমনিতেই তাদের রোজগারের টান পড়ায় ঋণে জর্জরিত। এই ১৪৭ দিন ছাড়াও ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরায় ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য সম্পদ মন্ত্রণালয়।
সেখানে বলা হয়েছে, সামদ্রিক জলসীমায় মাছের বংশবৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন, সামদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
ভাইভাই ফিসের পরিচালক শাহআলম হাওলাদার দৈনিক বাংলাকে জানান, পটুয়াখালীর সবচেয়ে বড় দুটি মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুর। এখান থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ চালান হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে গত কয়েক বছর ধরে বছরে দুই বার নিষেধাজ্ঞা, বৈরী আবহাওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি। সব মিলিয়ে এই পেশা এখন হুমকির মুখে।
ট্রলারের মালিক ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, ‘কোম্পানির কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা দাদন নিয়ে দুটি ট্রলার তৈরি করেছি। দুই বছরে এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখিনি। এর ওপর আবার অবরোধ, এখন এই পেশায় টিকে থাকা আমাদের মতো মানুষের পক্ষে সম্ভব না।’
জেলে মাঝি নয়া মিয়া বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি দাবি করে আসছি, ৬৫ দিনের অবরোধকালে আমরা মাছ ধরা বন্ধ রাখলেও পার্শ্ববর্তী ভারতীয় জেলেরা আমাদের দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে। আমাদের দাবি, এই সময়ে আমাদেরও মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা, নয়তো অবৈধভাবে ভারতীয় জেলে ট্রলারগুলো বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ বন্ধ করা হোক।’
কলাপাড়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা সময়ের সন্ধানে বলেন, ‘জেলেদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলেদের ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনাও চলছে।’