দিনে তিন বার, তিন মাস কৃমির ওষুধ খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। ছবি:সংগৃহীত
কৃমিনাশক ওষুধের ডোজ দিনে তিনবার তিন মাস- এমন কথা সাধারণত কেউই বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু এমন কথা যখন কোনো চিকিৎসক লিখিত আকারে প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে বলেন, তাহলে কেমন হবে?
সাধারণত চিকিৎসকরা লিখিত আকারে কিংবা মৌখিকভাবে যা বলেন, রোগী তা অক্ষরে অক্ষরে পালনের চেষ্টা করে থাকেন। সাধারণ কৃমিনাশক ওষুধ এমবিবিএস কোনো চিকিৎসক প্রতিদিন একটা করে তিনবার তিন মাস খেতে নির্দেশনা দেয়। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের বৈধতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আশা স্বাভাবিক।
এমনই প্রেসক্রিপশন লিখেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পাস করা চিকিৎসক দাবি করা সুমাইয়া আজাদ প্রাপ্তি। তিনি রংপুর মেডিকেল থেকে এমবিবিএস সিএমইউ আল্ট্রা এবং বিএমডিসি (রেজি : এ-১৩০৩৮৮) নিবন্ধনকৃত।
সুমাইয়া আজাদ প্রাপ্তি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার মজিদিয়া ট্রাস্টের আইডিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্ত্রী, প্রসূতি গাইনি, মেডিসিন রোগের অভিজ্ঞ এবং সনোলজিস্ট পরিচয়ে নিয়মিত রোগী দেখেন।
তবে নিজের এমন ভুল স্বীকার করতে নারাজ তিনি। কালবেলাকে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘এটি কলমের ভুল (স্লিপ অব পেন)।’ কলমের ভুলেই না কি এমনটা হয়েছে। কালবেলাকে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে ডাক্তার সুমাইয়া আজাদ প্রাপ্তি নিজের ভুল স্বীকার করেছেন। তার এ একটু ভুলে যে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন দেখা দিবে তিনি হয়ত সেটা জানেন না।
ভিডিও বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ‘ক্যালসিয়ামের ওষুধ এনজেনটা ডিএস লিখতে চেয়েছিলেন, সেটা কলমের ভুলে এলবেন ডিএস হয়ে গেছে।’
এমনই একটি প্রেসক্রিপশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসক সুমাইয়া আজাদ প্রাপ্তির চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রশ্ন উঠেছে তার সার্টিফিকেট বৈধ কি না।
তবে নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক ফার্মেসির পরিচালক জানিয়েছেন, এমন ভুল তিনি একাধিকবার করেছেন। কখনও ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের ফরমেটে সিরাপ আবার সিরাপের ফরমেটে ট্যাবলেট লিখেছেন।
এ বিষয়ে মজিদিয়া ট্রাস্ট আইডিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মাহবুবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।