ঢাকা ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১
শিরোনাম ::
রাজশাহীর বাগমারাতে ইটভাটাগুলোতে কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ,কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ নষ্ট ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে কর্মী সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহীর বাগমারা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায়, নবম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স এর গ্রাহক মৃত্যুতে নমিনীকে বীমার চেক হস্থান্তর গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াতের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত ১৩ চট্টগ্রাম লোহাগাড়া কলাউজন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানের উপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রেলপথ ধরে খুলনা ৪ ঘণ্টায়,শুরু হবে ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশের স্কুলের ছাত্ররা কওমি মাদরাসায় চলে যাচ্ছে: শিক্ষা সচিব শিবগঞ্জে শোলা গাড়ি সাহা লাস্কর জিলানী ( রা) দাখিল মাদ্রাসা যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস ও বর্ণাঢ্য দিবস উদযাপিত চট্টগ্রামে লোহাগাড়া জেনারেল হাসপাতালের শ্রদ্ধাঞ্জলি

কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ:লজ্জায় স্বামী-স্ত্রী আত্মহত্যা

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

রাজিবপুরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।লজ্জায় স্বামী-স্ত্রী বিষপান করেছে।ছবি:সময়ের সন্ধানে

 

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় লজ্জায় স্বামী-স্ত্রী বিষপান করেছে। এতে স্বামী জাহাঙ্গীর বেঁচে গেলেও মারা যান স্ত্রী আশা খাতুন।

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা সদরের কলেজ পাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলম (২৭) ও তার স্ত্রী আশা খাতুন (২৩) বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংসারে অভাব অনটনের কারণে জহির মন্ডলপাড়া গ্রামের জয়নাল আলীর কাছ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা হাওলাত নেন জাহাঙ্গীর-আশা দম্পতি। কিন্তু ধারের টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদার টাকা চেয়ে বসে। কিন্তু টাকা নেই বলে জানান আশা খাতুন। আশা খাতুন এও জানান বর্তমানে টাকা নেই আর কিছুদিন পরে টাকাটা পরিশোধ করবে।

কিন্তু পাওনাদার তার টাকাটা পুনরায় চেয়ে বসে এবং টাকা না দিতে পারায় আশা খাতুনকে শারীরিকভাবে অবৈধ সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। তার পরিবার অভাবগ্রস্ত হওয়ায় তার সেই অবৈধ প্রস্তাব মেনে নেন তিনি এবং জয়নালের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে জয়নাল তার সাথে শুক্কুর আলী নামের একজনকে সাথে নিয়ে এসে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরবর্তীতে তারা দুজন আবারও সোলেমান নামের আরেকজনকে সাথে নিয়ে এসে শারীরিক সম্পর্ক করেন এবং সোলেমান গোপনে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে। পরে তাকেও যদি শারীরিক সম্পর্ক করতে না দেয় তাহলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সেও শারীরিক সম্পর্ক করে।

এভাবে প্রতিনিয়ত বাদী আশা খাতুনের রুমে ঢুকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ফলে তিনি অতিষ্ঠ হয়ে যায় এবং তার স্বামী জাহাঙ্গীর স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের কথা লোকমুখে শোনেন। শুধু তাই নয় বিছানার তোশকে রক্ত দেখতে পেয়ে স্ত্রীর কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সে তার স্বামীর কাছে সব খুলে বলে। স্বামী তার স্ত্রীর মুখে সবকিছু শুনে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করেন।

পরে মানুষকে মুখ দেখানোর লজ্জায় ঘরে থাকা ফসলে দেওয়া কীটনাশক (বিষ) গত শুক্রবার (২৪ মে) দুপুর আনুমানিক ২টায় স্বামী-স্ত্রী মিলে পান করেন। পরবর্তীতে তাদের দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াশ করার পর জাহাঙ্গীর কিছুটা সুস্থ হলেও। আশা খাতুন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

সেখানে তিনদিন চিকিৎসা গ্রহণের পর আশা খাতুনের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে তারা গত সোমবার (২৮ মে) রাতে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে গতকাল বুধবার (২৯ মে) দুপুর আনুমানিক ২টায় আশা খাতুন তার নিজ বাড়িতেই মৃত্যুবরণ করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, রাজিবপুর থানার গাড়িচালক মোজাহারুল ইসলাম, বাবুর্চি রবিউল ইসলাম, আমেছ উদ্দিন বিবাদী জয়নাল, শুক্কুর, আলম ও সোলাইমানকে নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাদী জাহাঙ্গীর আলমকে ২০ হাজার টাকা দিতে চাইলে তিনি তা না নিয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ও উপস্থিত সকলের কাছে। তিনি এও জানান সুষ্ঠু বিচার না দিলে দুজনই আত্মহত্যা করবেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিষপান করেন তারা। এতে জাহাঙ্গীর আলম বাচঁলেও মারা যান তার স্ত্রী আশা খাতুন। মৃত্যুর সময় আশা খাতুন দুইবছরের একটি শিশু কন্যা রেখে যান।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে দুজনই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে।

তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীর আলম একজন মানসিক ভারসাম্যহীন।

এ বিষয়ে জয়নালের কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কিছুই জানি না সব মিথ্যা কথা। তবে টাকা পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং ধর্ষণের ঘটনাটি অস্বীকার করলেও ২০ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসা করার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। তবে শুক্কুর আলী ও সোলামানের সাথে কয়েকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আশিকুর রহমান সময়ের সন্ধানে বলেন, গতকালের ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 

সস/এস

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহীর বাগমারাতে ইটভাটাগুলোতে কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ,কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ নষ্ট

কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ:লজ্জায় স্বামী-স্ত্রী আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ০৩:০৫:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

রাজিবপুরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।লজ্জায় স্বামী-স্ত্রী বিষপান করেছে।ছবি:সময়ের সন্ধানে

 

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় লজ্জায় স্বামী-স্ত্রী বিষপান করেছে। এতে স্বামী জাহাঙ্গীর বেঁচে গেলেও মারা যান স্ত্রী আশা খাতুন।

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা সদরের কলেজ পাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলম (২৭) ও তার স্ত্রী আশা খাতুন (২৩) বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংসারে অভাব অনটনের কারণে জহির মন্ডলপাড়া গ্রামের জয়নাল আলীর কাছ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা হাওলাত নেন জাহাঙ্গীর-আশা দম্পতি। কিন্তু ধারের টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদার টাকা চেয়ে বসে। কিন্তু টাকা নেই বলে জানান আশা খাতুন। আশা খাতুন এও জানান বর্তমানে টাকা নেই আর কিছুদিন পরে টাকাটা পরিশোধ করবে।

কিন্তু পাওনাদার তার টাকাটা পুনরায় চেয়ে বসে এবং টাকা না দিতে পারায় আশা খাতুনকে শারীরিকভাবে অবৈধ সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। তার পরিবার অভাবগ্রস্ত হওয়ায় তার সেই অবৈধ প্রস্তাব মেনে নেন তিনি এবং জয়নালের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে জয়নাল তার সাথে শুক্কুর আলী নামের একজনকে সাথে নিয়ে এসে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরবর্তীতে তারা দুজন আবারও সোলেমান নামের আরেকজনকে সাথে নিয়ে এসে শারীরিক সম্পর্ক করেন এবং সোলেমান গোপনে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে। পরে তাকেও যদি শারীরিক সম্পর্ক করতে না দেয় তাহলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সেও শারীরিক সম্পর্ক করে।

এভাবে প্রতিনিয়ত বাদী আশা খাতুনের রুমে ঢুকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ফলে তিনি অতিষ্ঠ হয়ে যায় এবং তার স্বামী জাহাঙ্গীর স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের কথা লোকমুখে শোনেন। শুধু তাই নয় বিছানার তোশকে রক্ত দেখতে পেয়ে স্ত্রীর কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সে তার স্বামীর কাছে সব খুলে বলে। স্বামী তার স্ত্রীর মুখে সবকিছু শুনে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করেন।

পরে মানুষকে মুখ দেখানোর লজ্জায় ঘরে থাকা ফসলে দেওয়া কীটনাশক (বিষ) গত শুক্রবার (২৪ মে) দুপুর আনুমানিক ২টায় স্বামী-স্ত্রী মিলে পান করেন। পরবর্তীতে তাদের দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াশ করার পর জাহাঙ্গীর কিছুটা সুস্থ হলেও। আশা খাতুন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

সেখানে তিনদিন চিকিৎসা গ্রহণের পর আশা খাতুনের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে তারা গত সোমবার (২৮ মে) রাতে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে গতকাল বুধবার (২৯ মে) দুপুর আনুমানিক ২টায় আশা খাতুন তার নিজ বাড়িতেই মৃত্যুবরণ করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, রাজিবপুর থানার গাড়িচালক মোজাহারুল ইসলাম, বাবুর্চি রবিউল ইসলাম, আমেছ উদ্দিন বিবাদী জয়নাল, শুক্কুর, আলম ও সোলাইমানকে নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাদী জাহাঙ্গীর আলমকে ২০ হাজার টাকা দিতে চাইলে তিনি তা না নিয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ও উপস্থিত সকলের কাছে। তিনি এও জানান সুষ্ঠু বিচার না দিলে দুজনই আত্মহত্যা করবেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিষপান করেন তারা। এতে জাহাঙ্গীর আলম বাচঁলেও মারা যান তার স্ত্রী আশা খাতুন। মৃত্যুর সময় আশা খাতুন দুইবছরের একটি শিশু কন্যা রেখে যান।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে দুজনই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে।

তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীর আলম একজন মানসিক ভারসাম্যহীন।

এ বিষয়ে জয়নালের কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কিছুই জানি না সব মিথ্যা কথা। তবে টাকা পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং ধর্ষণের ঘটনাটি অস্বীকার করলেও ২০ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসা করার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। তবে শুক্কুর আলী ও সোলামানের সাথে কয়েকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আশিকুর রহমান সময়ের সন্ধানে বলেন, গতকালের ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 

সস/এস