কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের দ্বীপ এলাকা চর বালুয়ায় মা-মেয়েকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ছবি:সংগৃহীত
নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের দ্বীপ এলাকা চর বালুয়ায় মা ও মেয়েকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার রাতে ঘটনাটি ঘটার পর স্থানীয় সমাজপতিদের কাছে বিচার দেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু বিচার না পেয়ে শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন। পরে রাতে নির্যাতনের শিকার নারী, তার মেয়ে ও অভিযুক্ত দুইজন হাসান ও হারুনকে চর বালুয়া ক্যাম্পের পুলিশ কোম্পানীগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়।
নির্যাতনের শিকার নারী অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী কাভার্ডভ্যানচালক। বাড়িতে তিনি, তার মেয়ে (১৭) ও এক দেবরসহ (২১) থাকেন। তাদের বাড়ির আশেপাশে তেমন কারো বাড়িঘর নেই। গত রোববার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ছয় যুবক তাদের বাড়িতে আসে। তারা ঘরের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে ওই নারীর দেবরের মুখসহ হাত-পা বেঁধে রাখে। এরপর তাকে ও তার মেয়েকে টানা হেঁচড়া করে ঘর থেকে বাহিরে নিয়ে যায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, যুবকদের মধ্যে তিনজন তাকে টেনে নিয়ে যান বাড়ির পুকুর পাড়ে। আর তিনজন তার মেয়েকে বসত ঘরের পাশের রান্নাঘরের সামনে নিয়ে যান। এরপর তাকে পুকুর পাড়ে এবং মেয়েকে রান্নাঘরের সামনে রাত তিনটা পর্যন্ত ধর্ষণ করে ওই যুবকেরা। যাওয়ার সময় ঘর থেকে টাকা-পয়সাসহ জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনার পর পরদিন সকালে বিষয়টি স্থানীয় সমাজপতিদের অবহিত করেন এবং তাদের কাছে ঘটনার বিচার চান। কিন্তু তারা বিচারের নামে টালবাহানা করেন। পরে বাধ্য হয়ে শনিবার বিকেলে স্থানীয় চর বালুয়া পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। তখন পুলিশ পুরো ঘটনা শুনে এবং অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করে। আটকের পর ওই নারী, তার মেয়ে এবং আটকদের সঙ্গে নিয়ে রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসেন।
জানা গেছে, ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছয়জন চর এলাহী বিএনপির সাবেক সভাপতি মৃত আবদুল মতিন তোতা চেয়ারম্যানের লোক। তোতা চেয়ারম্যান ৫ আগস্টের পর খুন হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ও তাদের লোকজন তাকে নানা ধরণের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনার পর তারা সবাই এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, মা ও মেয়ে থানায় এসেছেন। তাদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।