যে সম্পর্ক হয়ে উঠা যেমন কঠিন, আবার খুব সহজেই ভেঙে যেতে পারে তা। প্রতিক ছবি
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনো মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ থাকেন। বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ক থাকলেও এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জীবনসঙ্গী। আর এই সম্পর্ক হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। যা তিল তিল করে ধীরে ধীরে গড়ে উঠে। এই সম্পর্কের অন্যতম বিষয় হচ্ছে প্রেম-ভালোবাসা। যে সম্পর্ক হয়ে উঠা যেমন কঠিন, আবার খুব সহজেই ভেঙে যেতে পারে তা।
সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে বা পাকাপোক্ত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিজ্ঞা করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম প্রতিশ্রুতি ‘বিয়ে’। কিন্তু দুঃখজনক হলেও, সেই সম্পর্ক অনেক সময় বিচ্ছেদে গড়ায়। ব্রেকআপ বা বিচ্ছেদ কখনোই কোনো সম্পর্কে প্রত্যাশ্যা থাকে না। কিন্তু অনেক সময় এমনটা হয়ে যায়। বিভিন্ন কারণে বিচ্ছেদ হলেও উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কারণ জানিয়েছে মিশরের সংবাদমাধ্যম ইজিপট টুডে। এবার তাহলে প্রতিবেদন অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো।
অবিরত কলহ: যেকোনো সম্পর্কেই কথা কাটাকাটি কিংবা ঝগড়া হয়ে থাকে। আবার তীব্র ভালোবাসাও থাকে। কিন্তু সম্পর্কের তীক্ত বিষয়গুলো যখন বাড়ির দেয়াল পেরিয়ে বাইরে জানাজানি হয়, তখন বিষয়গুলো পিষিয়ে তোলে দাম্পত্যজীবনকে। ফলে সম্পর্কের তীক্ততা কাটিয়ে উঠা কঠিন হয়ে পড়ে। আর এমনটা যদি অবিরত চলতেই থাকে দু’জনের মধ্যে, তাহলে এ অবস্থায় মুক্তির কথা এসে থাকে ভাবনায়।
সবসময় সন্দেহ করা: সম্পর্কে থাকলে অনেক বিষয়ই আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে, যা আবার আপনার সঙ্গীর কাছে সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আবার ব্যবসা কিংবা অফিসের কাজে প্রতিদিন একইসময় বাসায় ফেরা হবে না। কাজের প্রয়োজনে ঘরে ফেরার সময় যেমন আলাদা হবে, একইভাবে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে। এ অবস্থায় যদি সঙ্গীকে সন্দেহ করেন, তাহলে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হবে। এর বাইরেও যদি কোনো কারণে কোনো বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে সন্দেহ করতে থাকেন, তা থেকে ক্রমশ সাংসারিক সমস্যা তৈরি হবে। এ অবস্থায় নিজেরা বসে খোলামেলা আলোচনা করলে বিষয়টি সহজেই সমাধান হয়। কিন্তু এমনটা না হলে সন্দেহ থেকে একপর্যায়ে বিচ্ছেদে গড়ায় সেই সম্পর্ক।
ধৈর্যশীল ও সহনীয় না হওয়া: সম্পর্কে থাকলে ছোট ছোট কিছু ভুল-ভ্রান্তি হবেই। আবার অনেক সময় ঝগড়াও হবে। সেসব আবার সমাধানও হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। কথার প্রেক্ষিতে পাল্টা কিছু বলতে গিয়ে অনেক সময়ই ব্যক্তি বা পারিবারিকভাবে আক্রমণ হয়ে যায়। যা একদমই ঠিক নয়। সাধারণত রাগের ক্ষেত্রে একজন কথা বললে আরেকজনকে সহনীয় হতে হয়। পরবর্তীতে নিজেরা বসে ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা করলে তাতে সহজেই সমাধান হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিক কথা বাড়ালে তাতে সমস্যা আরও জটিল হয়।
যোগাযোগের অভাব: যোগাযোগকে বলা হয় চাবিকাঠি। যো কোনো ধরনের সম্পর্কেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই যোগাযোগ। মনের মানুষটিকে মনের কথা বলুন, তার সঙ্গে সুন্দর ভাবনাগুলো ভাগ করে নিন। এতে দু’জনেই আনন্দিত ও হালকা অনুভভ করবেন। আপনিও তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। সে কি বলতে চায় আগ্রহ প্রকাশ করুন। এতে কারও মনে কোনো বলতে না পাারা কথা থাকবে না। আর এই নির্দ্বধায় বলতে পারা কথাগুলোই দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। এতে সম্পর্ক যেমন মজবুত হবে, তেমনই মনও ভালো থাকবে। কিন্তু সম্পর্কে যদি এই যোগাযোগই না থাকে, তাহলে অল্পতেই শেষ হয়ে যাবে তিল তিল করে গড়ে উঠা সম্পর্ক।
সঙ্গীকে বুঝতে না পারা: সম্পর্কে থাকলে অবশ্যই সঙ্গীর মানসিকতা বুঝতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত দু’জন মানুষের আবেগীয় কিছু চাহিদা থাকে, যা একে অপরের বুঝে নিতে হয়। নিজেদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া করে নিতে হবে। তা না হলে সঙ্গীর মানসিকতা বুঝতে পারবেন না। সঙ্গীর আবেগীয় চাহিদা বুঝতে পারবেন না। বিশ্বাস ও নির্ভরশীলতার জায়গা থেকেই একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী করা হয়। যেখানে আবেগ-অনুভূতি মূল্যায়ন হয় এবং পরস্পর মানসিকভাবে সুখি থাকে।
আবার মানসিকতার বাইরে এমন কিছু চাহিদা থাকে, যা আর্থিকভাবে পূরণ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সঙ্গীর বিবেচনা করতে হবে, কোনটি আবশ্যিক প্রয়োজনীয় এবং কোনটি ঐচ্ছিক। তারপর সামর্থ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিষয়টি নিতে হবে। আর আপনার সঙ্গীর আয় সম্পর্কে জেনেও যদি তাকে এ অবস্থায় কঠিন পরিস্থিতি কিংবা মানসিকভাপে চাপে রাখেন, তাহলে দূরত্ব তৈরি হবে। হতে পারে তা সংসারের যেকোনো চাহিদা বা ব্যক্তি চাহিদার ক্ষেত্রে।