শাকিল ওরফে মুসা নামে ওমান প্রবাসীকে হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার। ছবি সময়ের সন্ধানে
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়িতে ১১ বছর পর শাকিল ওরফে মুসা নামে ওমান প্রবাসীকে হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১১ নভেম্বর) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলএ এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জেলার মানিকছড়ির আছারতলী এলাকার কালাম কাজীর ছেলে শাকিল ওরফে মুসার সঙ্গে পরকিয়া প্রেম ছিল নাসিমা আক্তারের। অবৈধ মেলামেশায় নাসিমা গর্ভবর্তী হয়ে পড়লে তাকে রেখে ওমান চলে যায় শাকিল। ওমান যাওয়ার পর তাদের মাঝে আবারও যোগাযোগ স্থাপন হয় এবং নাসিমা গর্ভপাত করে। শাকিল প্রবাসে অর্জিত অর্থের কিছু অংশ নাসিমাকে পাঠায়। কিন্তু শাকিল দেশের বাইরে থাকার সুযোগে মনির হোসেন নামে আরেকজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে নাসিমা। দ্বিতীয় প্রেমিক মনিরকে বিয়ে করতে এবং শাকিলের অর্থ আত্মসাত করতে কৌশলে নাসিমা তাকে ওমান থেকে দেশে আসতে বলে। ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে শাকিল নিজের ঘরে না গিয়ে পরকিয়া প্রেমিকা নাসিমার কাছে যায়। সেদিন রাতে নাসিমা তার ভাই আনোয়ার হোসেন ও বাবা শরিয়ত উল্লাহের সহযোগিতায় শাকিলকে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং মরদেহ গুম করে। দীর্ঘ ১১ বছর পর পারিবারিক কলহের জেরে নিজের ভাই ও বাবাকে ফাঁসাতে হত্যার বিষয়টি শাকিলের মা রেহেনা বেগমকে জানায় নাসিমা। নাটকীয়ভাবে মামলায় নাসিমা ও তার স্বামী মনির সাক্ষী হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলার এজাহার পাওয়ার পর অভিযুক্ত শরিয়ত উল্লাহ ও তার ছেলে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে এবং নাসিমার পরিকল্পনার কথা বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে নাসিমা ও তার স্বামী মনিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, নিজের বাবা ও ভাইকে ফাঁসাতে কৌশলে ওই নারী গত ১০ অক্টোবর নিহত শাকিলের মাকে দিয়ে হত্যা মামলা করায়। নাসিমা ও তার স্বামী মনির ওই মামলায় সাক্ষী হয়। মামলার পর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যাকাণ্ডে নাসিমার সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে হত্যাকারীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানিকছড়ি ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি এলাকার দক্ষিণ সাপমারা এলাকার গহীন জঙ্গল থেকে ৫টি হাঁড়, মাথার খুলি ও ব্যবহৃত কাপড়ের কিছু অংশ বিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। শাকিলের স্বজনদের সঙ্গে উদ্ধারকৃত অঙ্গসমূহের ডিএনও পরীক্ষার কাজ চলমান আছে।