
আইসিটি ভবন। ছবি সময়ের সন্ধানে
রাজশাহী প্রতিনিধি:
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি) পরিবর্তনশীল আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে দেশের সরকার এবং উচ্চ নীতি-নির্ধারণকারীরা আইসিটির ভুমিকা প্রধান। এই পরিবর্তনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কার্যক্রমে নতুন উদ্দীপনা যোগ করেছে।
সরকার দেশের প্রত্যেক জেলা উপজেলা পরিষদে একটি করে আইসিটি দপ্তর নিমার্ণের উদ্দ্যোগ গ্রহন করেন এবং তার বাস্তব রূপ দিতে কার্যক্রম শুরু হয়। একই ভাবে রাজশাহী জেলা পরিষদসহ ৯টি উপজেলায় আইসিটি ভবন নির্মাণ হঠাৎ থমকে দাড়ায়। উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে উপজেলা এলজিইডি মূলত ভবন নির্মাণ কাজ করছেন। জেলার চারঘাট উপজেলা আইসিটি ভবন সিংহভাগ দৃশ্যমান হলেও বাকি ৮টি উপজেলার নির্মাণ কাজের কোন অগ্রগতী নেই। ধোঁয়াশার মধ্যে কোটি কোটি টাকার হিসাব। দপ্তরের শ্রেনী বিন্যাশে সবাই নিজ নিজ দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন।
গত ৫আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পুঁজি করে জেলার উপজেলার আইসিটি ভবন নির্মাণের অজুহাত এক সুতোয় গাথা। চারঘাট, বাঘা, পুঠিয়া, দূর্গাপুর, বাঘমাড়া, তানোর, মহনপুর, গোদাগাড়ী এবং পবা উপজেলা এলজিডি প্রকৌশলীরা বলছেন, ছাত্র আন্দোলনে পর থেকে সকল নির্মাণ কাজ স্থবির হয়েগেছে। দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি, ঠিকাদার কাজ রেখে চলে গেছে। কখনও বা বলছেন পরবর্র্তি বাজেট পেলে পূনরাই নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
জেলার উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের তথ্যমতে প্রত্যেক উপজেলায় আইসিটি ভবন নির্মাণে ০১ কেটি ৬৮ লক্ষ ৪৪ হাজার ৩৪৯.৫৬ টাকা (ভ্যাট ট্রাক্স বাদ দিয়ে কিছু কম বেশি হতে পারে) অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে র্চুক্তি মূল্য ০১ কোটি ৫১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৯৪১.৬০৪ টাকা। দূর্গাপুর উপজেলা প্রকৗশলী মাসুক-ই- মোহাম্মদ বলেন, গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারী কাজের শুরু হয়ে ১১ নভেম্বর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ইতোমধ্যে দুইবার অতিরিক্ত সময় দেওয়া হলেও কাজের কোন অগ্রগতী নেই। আবারো সময়ের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য উপজেলার আইসিটি দপ্তর গুলো নির্মাণের বাস্তব চিত্র একই। তবে চারঘাট উপজেলা প্রকৌশলী রতন মজুমদার বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভবনটি আইসিটি দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে স্থানীয় বিভিন্ন মহলের অনেক সচেতন নাগরীক বলেন, প্রতিটি উপজেলার ৪ তলা ভবন রয়েছে। শুধু এক তলা অতিরিক্ত হয়ে আইসিটির জন্য ৫তলা ফ্লোর নির্মাণ হচ্ছে। সেখানে ওই বরাদ্দ যথার্থ। কিন্ত সরকারী কাজ শেষ হতেই চাচ্ছে না। প্রত্যেক দপ্তর থেকে দুর্নীতির পরিমান কমাতে না পারলে সুন্দর একটি দেশ পাওয়া সম্ভব না। সুবিধাবঞ্চিতরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি) থেকে কোন ধরনের সুফল পাচ্ছে না। আইসিটির দাপ্তরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জোড়াল কোন কাজে নেই। তাদের নিজেদের অলস সময় অতিবাহিত হচ্ছে। ওই সময় স্থানীয়দের সেবার মান উন্নয়নে তাদের কাজ কোথায়? এমনটাই প্রশ্ন তুলেছেন সুবিধাবঞ্চিতরা।
এবিষয়ে জেলা আইসিটি অফিসার প্রকৌশলী মাহমুদউজ্জামান বলেন, উপজেলা পর্যায়ে আইসিটি ভবন নিমার্ণে বিষয়ে হস্তক্ষেফ করা তার নিয়ন্ত্রনে নেই। কেন্দ্রীয়ভাবে আইসিটি দপ্তর গুলো তদারকি করছেন। প্রত্যেক উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও এবং এলজিইডি ভবন নির্মাণের বিষয় গুলো দেখাশুনা করছেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কার্যক্রমে বিষয়ে তাদের দপ্তর ততপর রয়েছেন। জেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তর সেবার চাহিদা অনুযায়ী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দপ্তর কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী অফিসারদের বক্তব্যে জানা যায়, তারা প্রতিনিয়ত ভবন নির্মাণে তদারকি করছেন। কিন্ত কাজের গতি সন্তোষজনক নয়। তবে দ্রুত আইসিটি ভবন নির্মাণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) তানজিলা ইসলাম বলেন, উপজেলা আইসিটি ভবন নির্মাণের কাজ স্থবির থাকার কথা না। ইতোমধ্যে একটি টিম আইসিটি সকল বিষয় গুলো তদন্ত করছে। সরজমিনে আইসিটি ভবন নির্মাণের বিষয় গুলো দেখে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।