ঢাকা: ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশনের (আইএমও) এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশ ক্যাটাগরি সি-তে জয়লাভ করেছে। এটি বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের আরেকটি বড় অর্জন।এমনটি বলেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমনটি বলেন। আইএমওর নির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিজয়ের মাসে এটি বড় একটি অর্জন। ১৭৪টি দেশ নিয়ে আইএমও সংস্থা। এখানে আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেছিলাম নির্বাহী পরিষদের সদস্য হতে। আমরা এর আগে বি ক্যাটাগরিতে কাউন্সিল হিসেবে ছিলাম, তখন সেটা নির্বাচিত ছিল না, ছিল সিলেকশনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, যেসব দেশের সামুদ্রিক পরিবহন নিয়ে বিশেষ আগ্রহ আছে এবং কাউন্সিলে যারা বিশ্বের সব প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করবে, এমন ২০টি দেশ সি ক্যাটাগারিতে নির্বাচিত হয়েছে। ১৬৮টি দেশের বৈধ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ১২৮টি ভোট।
গেল পাঁচ বছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কী পরিমাণ সাফল্য পেয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সন্তোষ প্রকাশের জায়গাটা আরও অনেক বড় ছিল। কিন্তু আমরা যে গতিতে শুরু করেছিলাম, সেটা আমরা পরিনি। কারণ আমাদের বড়ো ধরনের ধাক্কা মোকাবিলা করতে হয়েছে। কেবল বাংলাদেশই না, পুরো পৃথিবীতেই চলছে। ইউরোপের অনেক ধনী দেশও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। অনেক দেশে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। সে জায়গা থেকে আমাদের তেমন কোনো পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। এটি হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড়ো সফলতা।
তিনি বলেন, আপনারা বলতে পারবেন, যেসব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছিলাম, সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এত সংকটের মধ্যেও আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। নৌকা চলমান আছে।
সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রসীমা অর্জনের মধ্য দিয়ে পুরো পৃথিবী আমাদের কাছে অবারিত হয়ে গেছে। আজ মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর করছি। পৃথিবীর বড় বড় জাহাজগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য ইয়ার্ড আমাদের নেই। ভবিষ্যতে আমরা সেদিকে যাব। বন্দরগুলোকে আরও উন্নত করছি। এতে বাংলাদেশ একটি মেরিটাইম হাবে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, আমরা যখন ক্ষমতায় আসি, তখন ৩২টির মতো জাতীয় পতাকাবাহী জাহাজ ছিল, এখন তা বেড়ে ১০০ হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি সিরিয়ালে আছে, নিবন্ধন পেয়ে যাবে। আমরা দ্রুতই এগোচ্ছি বলা যায়। আমাদের জ্বালানি ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে। আমাদের পরবর্তী সরকার সমুদ্র অর্থনীতিকে সমন্বিত করার পদক্ষেপ নিতে পারবে। চূড়ান্ত সময় আমাদের হাতে চলে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইএমও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশ ক্যাটাগরি সি-তে জয়লাভ করেছে। গত ১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের শিপিং সংক্রান্ত বিশেষায়িত এ এজেন্সির ৩৩তম অধিবেশনে আইএমও-কনভেনশন ১৬ ও ১৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনটি ক্যাটাগরিতে কাউন্সিল সদস্য পদে গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে ২০২৪-২০২৫ সালের জন্য ক্যাটাগরি এ, বি ও সি-তে ৪০ সদস্যের নতুন আইএমও কাউন্সিল নির্বাচিত করা হয়।
কাউন্সিল নির্বাচনে সি ক্যাটাগরিতে মোট ২৫টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১৬৮টি বৈধ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৮টি ভোট পেয়ে ১৬তম হয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে।
সি ক্যাটাগরিতে জয়লাভ করা ২০টি দেশ হলো- সিঙ্গাপুর, মাল্টা, সৌদি আরব, তুরস্ক, মিসর, মেক্সিকো, ফিলিপাইন, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাহামা, সাইপ্রাস, মরক্কো, ডেনমার্ক, কাতার, বাংলাদেশ, কেনিয়া, পেরু, ফিনল্যান্ড ও জ্যামাইকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ