ঢালিউড কুইন খ্যাত চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস এবং গানবাংলার কৌশিক হোসেন তাপসের মধ্যে চলমান কিছু বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির সমাধান করে দিলেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে আসেন তারা।
ডিবি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার তাপস বলেন, আমি নিজে একজন শিল্পী, তাই অন্য কোনো শিল্পীর গায়ে কালি মাখাতে চাই না।
এরপর অপু বিশ্বাস প্রসঙ্গে তাপস বলেন, অপুর অনেক ফ্যান-ফলোয়ার আছে। তাই কারও বিরুদ্ধে লিগ্যাল অ্যাকশনে যেতে চাই না। অপু বিশ্বাসও মানুষ। সেও ভুল করতে পারে।
তাপস আরও বলেন, অপুর সাথে হয়তো আমাদের বনিবনা হয়নি। তাই ডিবি অফিসে আমরা লাঞ্চ করেছি। কারণ হারুন ভাই আমাদের অভিভাবক। নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মেটাতে আমাদের ইনভাইট করা হয় ডিবি থেকে। তাই আমি, মুন্নী ও অপু এখানে একসাথে হলাম।
ডিবি অফিসে অভিযোগ করা প্রসঙ্গে তাপস জানান, ‘আমি অপু বিশ্বাসের নামে কোনো অভিযোগ করিনি। তবে আমি আর মুন্নী আমাদের প্রাইভেসি ও কল রেকর্ড নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলাম। সেটার একটা সমাধান হোক সেটাই চেয়েছি। সে সমাধানের জন্যই হারুন ভাই, আমি, মুন্নী ও অপু একসাথে অনেকক্ষণ আলোচনা করলাম, একসঙ্গে কফি খেলাম। লাঞ্চও করেছি।’
অপু বিশ্বাস বলেন, ভাইয়া-ভাবির (কৌশিক হোসেন তাপস ও ফারজানা মুন্নী) সঙ্গে দেখা হওয়ায় আজ আমি অনেক খুশি। তবে এখানে দেখা হবে আমি আশা করিনি। তারপরও খুব খুশি লাগছে। আমার ভাইবোন সুখী আছেন এটি ভেবে। ভাইয়া কথার মাঝে যে বিষয়টি তুললেন। আমার পারিবারিক প্রসঙ্গ যা আপনারা সবাই জানেন। তার পরও আমি বলব— চলচ্চিত্রের স্বার্থে পারিবারিক বিষয়গুলো বারবার আনা উচিত না। আমার মনে হয় দায়িত্বের জায়গা থেকে প্রত্যেক মানুষের এটা মানা উচিত। কারণ আমরা যতদিন নায়ক-নায়িকা হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখব, ততদিন আপনারা সবাইকে জানাতে পারবেন।
এরপর নিজের ভুল স্বীকার করে অপু বলেন, আমি মনে করি আমরা সবাই মানুষ। ভুল মানুষেরই হয়। ভাইয়া-ভাবির মধ্যে আমাদের যে বিষয়টি হয়েছে, সেটি এখন আর নেই। আমার পেজে একটি ভিডিও আপনারা দেখেছেন। আমি দিয়েছিলাম আপনাদের সঠিক ব্যাখ্যার জন্য। কিন্তু ভাই-ভাবিকে কাছে পেয়ে, তাদের পারিবারিক জায়গাটি আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধার মনে হয়েছে। তাদের শ্রদ্ধার জায়গা থেকে আমি মনে করি ভিডিওটি আজ ডিলিট করব। আপনারাও যারা কনটেন্ট ক্রিয়েটর আছেন, তারাও ডিলিট করে ফেলবেন।
উল্লেখ, কিছু দিন আগে গানবাংলা টিভির চেয়ারপারসন তথা তাপসের স্ত্রী ফারজানা মুন্নি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে লেখেন, তাপসের সঙ্গে চিত্রনায়িকা বুবলী প্রেম করছেন। যদিও স্ট্যাটাসটি কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার সরিয়ে দেন তিনি।
এর কিছু দিন পর মুন্নির সঙ্গে অপু বিশ্বাসের একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে তাদের আলোচনার মূলে ছিলেন বুবলী। পুরো ঘটনাটি সম্প্রতি শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সঞ্চালনায় একটি অনুষ্ঠানে এসে পরিষ্কার করেন তাপস-মুন্নি।
কিন্তু ঘটনায় নতুন মোড় আসে গত ১৭ ডিসেম্বর ভোর রাতে, যখন একটি লম্বা ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন অপু বিশ্বাস। সেখানে তিনি অভিযোগের আঙুল মুন্নির দিকেই তোলেন। আর বুবলীর প্রতি বিষোদগার তো ছিলই।
অপুর ভিডিও বার্তার পর ওই দিনই (১৭ ডিসেম্বর) ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ জানান তাপস। অভিযোগে তিনি বলেছেন, ভিডিও বার্তা ও কল রেকর্ড ফাঁসের মাধ্যমে অপু তার ব্যক্তিগত জীবন ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছেন। সেই অভিযোগের সূত্রেই অপুকে তলব করেছিলেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ।