বিদ্যমান নানান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বাইরেও আগামী নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটি মনে করে, উৎপাদন কমে যাওয়ায় রপ্তানির ধীরগতি, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসংকট এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির গতি কমিয়ে দিচ্ছে। এসব কারণে চলতি অর্থবছরে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন–জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও কমিয়েছে সংস্থাটি।
এর আগে সেপ্টেম্বরের পূর্বাভাসে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছিল। নতুন পূর্বাভাসের ফলে তা কমার কথা বললেও কত কমবে তা জানায়নি সংস্থাটি।
আজ মঙ্গলবার সংস্থাটি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের ডিসেম্বর সংস্করণে এমন পূর্বাভাস প্রকাশ করে।
সরকার চলতি অর্থবছরে সাড়ে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে মালদ্বীপের প্রবৃদ্ধিও কমবে বলে মনে করে সংস্থাটি।
প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি সামনে মূল্যস্ফীতি বাড়ারও আভাস দিয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম এ উন্নয়ন সহযোগী। সংস্থাটির দাবি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালে এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতি বজায় রয়েছে। বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে এডিবি বলেছে, নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির হার প্রায় দুই অঙ্কের ঘরের কাছাকাছি ছিল।
এডিবি মনে করে, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, বাজারভিত্তিক মুদ্রানীতি প্রচলনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারের পণ্যের দাম কম থাকলেও মূল্যস্ফীতি কমতে পারে। এ ছাড়া ভালো ফলন হলে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমতে পারে। আর তা না হলে মূল্যস্ফীতির উত্তাপ থাকবে।
এডিবির পূর্বাভাস বলছে, ২০২৩ সালে এশিয়ার গড় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। ২০২৪ সালে তা কিছুটা কমে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। অন্যদিকে এশিয়ার গড় মূল্যস্ফীতিও ২০২৩ সালে কিছুটা কমে সাড়ে ৩ শতাংশ হতে পারে। তবে আসছে বছরে ভারতে ৬ শতাংশ এবং চীনে ৪ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলেও জানায় এডিবি।
জানা যায়, প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রকাশে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ কিছুটা রক্ষণশীল থাকলেও এডিপির পূর্বাভাস অপেক্ষাকৃত উদার থাকে। তবে এডিবির ঘোষিত পূর্বাভাসে ধারণা করা যায়, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার আরও কম হতে পারে।