আগামীকাল জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি গতকাল দলের নীতিনির্ধারকদের সুস্পষ্ট পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। এই নির্দেশনা মান্য করা না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও দলের নীতিনির্ধারক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে-
১. নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হবে: দলের নেতাকর্মীদেরকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হবে। কোনো প্রার্থী জয়ী হওয়ার জন্য কারচুপির আশ্রয় নিতে পারবে না, প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে পারবে না, জাল ভোট দিতে পারবে না। যদি এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সেটি যদি প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে আজীবন দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এমনকি তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, সে যে দলের প্রার্থী হোক না কেন।
২. ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে হবে: প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছে সেখানে ভোটার উপস্থিতি যেন বাড়ানো হয় সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে সমস্ত প্রার্থীদের কাছে এক বার্তায় আওয়ামী লীগ সভাপতি জানিয়েছেন যে, প্রার্থীদের প্রধান কাজ হল ভোটারদেরকে অভয় দেওয়া, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা এবং বেশিরভাগ ভোটার যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে যায় সেদিকে নজর রাখা।
৩. জাল ভোট বা ভুয়া ভোট বর্জন: কোনো অবস্থাতেই কোনো প্রার্থী যেন জাল ভোট না দেয়, কোনো ভুয়া ভোট না দেয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। আওয়ামী লীগ সরকার এবার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়। যার মাধ্যমে সারা বিশ্ব যেন বুঝতে পারে যে আওয়ামী লীগ সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
৪. কোথাও প্রশাসন যেন হস্তক্ষেপ না করে: আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা দিয়েছেন যে, প্রশাসনকে নির্বাচনে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোথাও যেন কোনো প্রার্থীর পক্ষে তারা পক্ষপাতিত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন না করে সেটি দেখভাল করতে হবে এবং এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যেখানে প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত থাকে।
৫. নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা: অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, নির্বাচন কমিশন স্বীয় বুদ্ধি বিবেচনা করে যে ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে। কাজেই নির্বাচন কমিশনই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে। তাই নির্বাচন কমিশনের কোনো বিষয় হস্তক্ষেপ করা যাবে না। নির্বাচন কমিশনকে বাধা দেওয়া যাবে না এবং নির্বাচন কমিশনকে অসহযোগিতা করা যাবে না।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতৃবৃন্দের কাছে আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বার্তা দিয়েছেন এবং সবগুলো আসনে প্রার্থীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশনা দিচ্ছেন।