পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় বিড়াল। সঙ্গ পছন্দ করায় প্রাণীটি পালতে পছন্দ করেন অনেকেই। তবে বিড়াল পালার সঠিক নিয়ম জানেন না অনেকেই।
গবেষণা বলে, বিড়াল পোষেন যারা তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কম থাকে। মিউ মিউ ডাক শরীরের পেশি ও অস্থির প্রদাহ নিরাময়ে কাজ করে থেরাপির মতো। পৃথিবীতে পোষ্য বিড়ালের সংখ্যা আনুমানিক ৫শ মিলিয়নেরও বেশি।
বিড়াল অসুখ ছড়ায় না
বাড়িতে বিড়াল আনার আগে জেনে নিন পরিবারের সবাই বিড়াল পছন্দ করবে কি না? পোষা প্রাণীর ব্যাপারে আপনার অনেক আগ্রহ। কিন্তু বিড়ালের নাম শুনলেই নাক সিটকান পরিবারেরই অন্য সদস্য। তাই বিড়াল ঘরে আনার আগে অন্য সদস্যের সঙ্গে কথা বলুন। বাড়িতে ছোট শিশু থাকলে অনেকে বিড়াল পালতে চান না। তারা মনে করেন সে অনেক অসুখ বয়ে আনবে। এটি ভ্রান্ত ধারণা। পোষা প্রাণীটিকে নিয়মিত গোসল করিয়ে পরিষ্কার রাখলে অসুখ ছড়ানোর ভয় থাকে না।
পোষ্যর দায়িত্ব নিতে হবে
বিড়াল পালা ও দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা জরুরি। একটি পোষ্য নিজের ঘরে আনলে সব দায়িত্ব বহন করতে হবে আপনাকেই। তাই বিড়াল আনার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন বিড়ালে এলার্জি আছে কি না।
নতুন পরিবেশ মানাতে সময় লাগে
নতুন পরিবেশে এসে বিড়ালের মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগে। রাতে জেগে থাকা, না খেয়ে থাকা, না ঘুমানো, কান্নাকাটি করা, বাইরে চলে যেতে চাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেক বিড়ালের মধ্য থেকে আসলে সে একাকিত্ব অনুভব করবে। কিন্তু ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সে নিজেকে নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়। তাই ধৈর্য ধরুন।
নিরাপত্তা
বিড়াল উপযোগী বাসা
বাসা ক্যাটপ্রুফ বা বিড়ালের উপযোগী করুন। বিশেষত বহুতল ভবন হলে। অর্থাৎ, যেখান দিয়ে বিড়াল বাইরে যেতে বা পড়ে যেতে পারে। এমনকি বাথরুমের জানালাও। সেখানটায় ছোট তার বা নাইলনের নেট দিয়ে দিন।
প্রশ্ন : বিড়ালকে কী কী ওষুধ বা টিকা নিয়মিত দিতে হবে? শবনম রহমান, ঢাকা
উত্তর : বিড়ালের অসুখগুলোর মধ্যে কৃমির সমস্যা একটি । তাই দেড় থেকে দুই মাস বয়স হলে কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে। তার এক সপ্তাহের মধ্যে অবশ্যই ট্রাইক্যাট ও রেবিস টিকা দিতে হবে। তিন মাস পর আবার একই টিকা দিতে হবে। রেবিস টিকা দেওয়া থাকলে বিড়ালটি অন্য প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের শিকার হলেও নিরাপদ থাকবে। টিকা দেওয়া থাকলে বিড়ালের কামড় বা আঁচড়ে মানুষের জলাতঙ্কের ঝুঁকি থাকে না। তবে বিড়াল গর্ভাবস্থায় থাকলে কিংবা বিড়ালের দেড় মাস কিংবা এর কম বয়সি বাচ্চা থাকলে, সেই মাকে টিকা দেওয়া যাবে না। বিড়াল ডিপথিরিয়া রোগের বাহক। টিকা দিয়েও এই রোগ প্রতিরোধ সম্ভব নয়। বাড়িতে গর্ভবতী নারী থাকলে বিড়ালের সঙ্গে তার না ঘুমানোই শ্রেয়। কারণ, অনেক সময় বিড়াল থেকে তিনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে একটু সাবধানতা প্রয়োজন।
প্রশ্ন : আমার একটি করে ছেলে ও মেয়ে বিড়াল রয়েছে। আমি দুটিই রাখতে চাই। এখন আমার করণীয় কী? নাবিদ আহমেদ, খুলনা
উত্তর : পরিণত বয়সে নির্দিষ্ট সময় পরপর বাচ্চা দিতে পারে মেয়ে বিড়াল, এক্ষেত্রে নিউটার বা বন্ধ্যাকরণ জরুরি। যেকোনো পশু চিকিৎসক এই অস্ত্রোপচার করেন। শুধু মেয়ে বিড়ালই নয়, ছেলে বিড়ালকেও নিউটার করা প্রয়োজন। ছোট্ট এই অস্ত্রোপচার বিড়ালকে রোগমুক্ত করার পাশাপাশি প্রাণীটির আয়ুও বাড়িয়ে দেয়। বিড়ালের বয়স চার থেকে ছয় মাস হলেই এটি করে ফেলা উচিত বলে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এতে অস্ত্রোপচারের পর দ্রুত সেরে উঠবে বিড়াল।
প্রশ্ন : আমার বিড়াল সবই খেতে পারে। কোনো বাছবিচার করি না। তবে মাঝে মাঝে বমি করে। এদের কেমন খাবার দিতে হবে? জিনাত আরা, বগুড়া
উত্তর : তাদের খাবারে আমিষ আবশ্যক। এরপর পর্যায়ক্রমে স্নেহ ও শর্করাজাতীয় খাবারের চাহিদা। চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস সিদ্ধ, সিদ্ধ কলিজা, সিদ্ধ মাছ, ডিম, সবজি সিদ্ধ (কুমড়া, লাউ, শসা, মটর, গাজর, শিমের বিচি, ব্রকলি, মিষ্টি আলু), সিদ্ধ ভুট্টা, সিদ্ধ গম, কলা, বিচি ছাড়া তরমুজ, ব্লু-বেরি, হার্ড চিজ, কটেজ চিজ, দই দিতে পারেন। গরম পানিতে ১০-২০ মিনিট ওট ভিজিয়ে রেখে ডিম বা কুসুম মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে খাওয়াতে পারেন। শীতের সময় তেলযুক্ত মাছ দেওয়া ভালো