২০২৪ সালের ধারা নিয়ে গত ডিসেম্বর মাস থেকেই আন্তর্জাতিক লাইফস্টাইল-ভিত্তিক ম্যাগাজিনগুলোয় লেখালেখি শুরু হয়ে গেছে। একেক দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী ধারাতেও দেখা যাচ্ছে কিছুটা ভিন্নতা। তবে সাধারণত প্যারিস, মিলান, নিউইয়র্ক আর লন্ডনের র্যাম্পের সাজপোশাকে যা তুলে ধরা হয়, সেটাই বছরজুড়ে নানাভাবে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়।
সাজপোশাকে কোনো নির্দিষ্ট একটি ধারা অনুসরণ করা হয় না; বরং বয়স অনুযায়ী পাশাপাশি চলতে থাকে অনেক স্টাইল, নকশা ও রং। সেখান থেকেই স্টাইলিশ মানুষেরা বেছে নেন পছন্দের কিছু অনুষঙ্গ অথবা এসবের বাইরে তৈরি করেন একদম নিজস্ব স্টাইল স্টেটমেন্ট।
কয়েক বছর ধরে আবহাওয়ায় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে বেশি। পুরো বিশ্বেই ডিজাইনাররা তাই এমন উপকরণ বেছে নিতে চাইছেন, যেন পোশাকের ভেতর দিয়ে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে। কোমরের ওপরে প্যান্ট পরার চল থাকবে। তবে জেন জি-রা একটু নামিয়েই পরবে। মেয়েদের মধ্যে বাড়তে পারে পোলো শার্টের চল। অনেকে লম্বা কাটের পোলো শার্টের বেল্ট পরে তৈরি করে নেবেন নিজস্ব স্টাইল স্টেটমেন্ট। প্যারিসে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক গেমসে সোনা ও রুপার মেডেলের ঝলক পোশাকের নকশায়ও দেখা যাবে। পোশাকে নানাভাবেই দেখা যাবে সোনালি ও রুপালি মেটালিকের ধারা। ব্যবহার করা হবে পালক।
ফ্যাশনের একটি বড় নির্ধারক জেন জি। টেকসই ফ্যাশনের পাশাপাশি স্ট্রিট ফ্যাশনেও তাদের আগ্রহ সমান। ভিনটেজ, রেট্রো, অতিরিক্ত বড় আকারের পোশাক এবং টেকসই কাপড়ের মধ্য দিয়ে বৈচিত্র্যকে উদ্যাপন করবে তারা। ২০০০ সালের স্টাইলগুলো আধুনিকভাবে তুলে ধরবে জেন জি প্রজন্ম। কটেজকোর ফ্যাশনও দেখা যাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে এ বছর। টেইলর কাটের পোশাকের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। পাশ্চাত্যে অনেকে সেকেন্ড হ্যান্ড পোশাক কেনার প্রতিও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। পাশাপাশি পোশাকে স্তর, বড় পকেট, ফোলানো হাতা ইত্যাদি থাকবে। সব বয়সী মানুষের পোশাকে পলকা ডট, বো ও ফিতার ব্যবহার রাখবেন ডিজাইনাররা।
বড় আকারের ব্যাগ আবার ফেরত আসছে এ বছর। টোট ব্যাগের প্রচলন দেখা যাবে। পোশাকে লাল, সবুজ ও নীল রঙের জনপ্রিয়তা বাড়বে। বেল্ট, স্টেটমেন্ট অলংকার, স্নিকারস থাকবে এ বছর; পাশাপাশি পায়ে দেখা যাবে কিটেন হিলের ব্যবহার।
আমাদের এখানে পোশাকের নিজস্ব একটা ভাবনা আছে, যেটা অনুসরণ করে ধর্মীয় উৎসব এবং বিশেষ বিশেষ দিন। অঞ্জন’স–এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন আহমেদ জানান, বসন্ত উৎসব, পয়লা বৈশাখ, পবিত্র ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, দুর্গাপূজা ও বড়দিনের সময় এক ধরনের কাজ হয়। একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে সাদা-কালো রঙের পোশাক, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের সময় লাল-সবুজ রং পরা হয়। প্রতিটি উৎসব ও বিশেষ দিনের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে রং নিয়ে কাজ করা হয়। বসন্তের সময় হলুদ, বাসন্তী ও সবুজ রঙের ব্যবহার হয় বেশি। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময় উপকরণ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ঋতুর একটা প্রভাব থাকে। দুর্গাপূজার সময় লাল, সাদা ও বাসন্তী রং থাকেই। এ ধরনের চিরাচরিত রংগুলোর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত রংগুলোর ঝলকও দেখা যাবে। এ ছাড়া ছেলেমেয়েদের পোশাকে প্যাটার্নের ওপর ভিত্তি করেও অনেক নকশা নির্ধারণ করা হবে। এ বছর প্রিন্টের পাশাপাশি এমব্রয়ডারির কাজও বাড়বে।